1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

পাখি শুমারি ২০২৫সালে মৌলভীবাজারে বাইক্কা বিলে পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি: অভিযোগ বিল ভরাট ও শিকারীদের ভয়ে কমছে

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৪২৮ বার পঠিত

বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিখ্যাত হাইল হাওরের মাছের অভয়াশ্রম বাইক্কা বিলে চলতি বছর পাখির শুমারিতে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমেছে অভিযোগ স্থানীয় ও পরিবেশবাদী সংগঠনের। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের আয়োজনে সম্পতি এই পাখি শুমারি ২০২৫ শেষ হয়েছে। অবিযোগ রয়েছে বার্ড ক্লাবের নিজস্ব কিছু সংবাদকর্মীদের নিয়ে পাখিশুমারি করা হয়।

১৮জানুয়ারি শনিবার বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্য ও বিশিষ্ট পাখি বিশেষজ্ঞ ডঃ পল থমসনের তত্ত্বাবধানে পাখিশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। এই পাখি শুমারিতে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসরাত জাহান ও সামিউল মোহসেনিন।

জানা গেছে ১০বছর আগের সঙ্গে বর্তমানের হিসাব করলে পাখির সংখ্যা ২০ভাগে নেমেছে অথচ এই বাইক্কা বিলে হাজার হাজার পাখি একসময় পুরো বিল দখল করে রাখত। যেভাবে পাখি কমেছে, তার পেছনে রয়েছে নানা কারণ। স্থানীয় মানুষকে সচেতন হয়ে পাখি শিকার বন্ধ ও তাদের আবাসের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এদিকে বিলে মাছের জন্য পর্যাপ্ত পানি না থাকা ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় পাখি অনেকচা কমে যাচ্ছে । এভাবে তলদেশ ভরাট, জলাভুমিতে মাছ ধরায় পাখি ও মাছ শিকারীদের শিখারে এমনিতেই কমে গেছে আরো কমে যাবে।

অপরদিকে মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাওয়া ও শিকারের শংখা পাখিরা যখন বুঝে নেয় তাদের আবাসস্থলটি নিরাপদ নয়। তখনই বছরে বছরে পাখির আনাগোনা অনেকটা কমতে শুরু করেছে। এছাড়া পরিযায়ী পাখি যখন যেখান থেকে তারা আসে সেখানে প্রজনন অবস্থা কি রকম ছিল বা যে পথে আসা যাওয়া করে সেই পথের সার্বিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। এমনকি বাইক্কাবিলের বাহ্যিক অবস্থা যে পরিমাণে গভীরতা,জলজ উদ্ভিদের পরিমাণ, প্রাচুর্য্য এসবের উপর নির্ভর করা কথা থাকলে সেরকম আবাসস্থল অনেকটা নেই।

উল্যেখ্য যে, পাখি শুমারী অনুপাতে ২০২৫সালের জানুয়ারিতে ৩৮প্রজাতির ৭৮৭০টি পরিযায়ী পাখি বিচরণ করছে। ২০২৪সালে ছিল ৩৩ প্রজাতির ৪৬১৫টি। ২০২৩ সালে ৪০প্রজাতির ৬১৪১টি পরিযায়ী পাখি পাওয়া গিয়েছিল বাইক্কা বিলে। রোববার (১৯জানুয়ারি) বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের পাখি পর্যবেক্ষণ এবং ওয়াইল্ডলাইফ কনজারবেশন সোসাইটির প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সামিউল মোহসেনিন এ তথ্য জানান।

বাইক্কাবিলে হাঁস জাতীয় পাখি দেখে গেছে। এর মধ্যে উত্তুরে খুন্তে হাঁস, পিয়াং হাঁস, মরচেরং ভুতি হাঁস, জিরিয়া হাঁস, ধলা বালি হাঁস, লেঞ্জা হাঁস প্রভৃতি। বাইক্কা বিলের জন্য নতুন চারটি জলচর পাখি উত্তুরে টিটি আমরা পেয়েছি। যা ইতোপূর্বে বাইক্কা বিলে পাওয়া যায়নি।

এনিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ বিলে পাখির খাবার সংকট। কারন বিল ভরাট ও পাখির খাবার অনেকটা কমে এবং পাখি শিখারীদের ভয়ে প্রতি বছর শীত মৌসুমে অতিথি পাখিসহ স্থানীয় পাখিরা দুরে চলে যাওয়ায় দিনে দিনে ভরপুর পাখির সংখ্যা কমতে শুরু করেছে।

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক কাজলসহ অনেকে বলেন, ছোট বেলা থেকেই বাইক্কা বিলে যাওয়া আসা যাওয়া করি। একসময় কত ধরনের পাখি দেখা যেত। কত পাখির ছবি এই বাইক্কা বিল থেকে তুলেছি। কিন্তু এখন দিন দিন পাখির সংখ্যা অনেক কমে গেছে। পাখি শিকারে ভয়ে ও খাদ্য সংকটে এখন আর তেমন আসে না। তা ছাড়া বাইক্কা বিলে যাওয়ার জন্য বড় পাকা রাস্তা হয়েছে। পর্যটকেরা অনবরত গাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। পাখিরা এসব ভয় পায়।‘বাইক্কা বিল নিয়ে অনেক কথা শুনেছি। বাইক্কা বিলে অনেক পাখি রয়েছে এ ধরনের ভিডিও দেখেছি। বাস্তবে এসে দেখলাম কিছুই নেই। এখানে এসে হতাশ হলাম। হাতে গোনা কয়েকটি পাখি পেয়েছি। সেগুলোও অনেক দূরে থাকে।

বাইক্কা বিল দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা বড়গাঙ্গিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মিন্নত আলী বলেন, এ বছর পাখির সংখ্যা অনেক কম। এ বছর বিলের কচুরিপানা বিল থেকে সরে যাওয়ায় পুরো বিল প্রায় ফাঁকা দেখা যাচ্ছে। পাখিরা এসব কচুরিপানা ও বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদের ওপরেই বেশি থাকে। বিলের কিছু অংশে শাপলা-পদ্ম টিকে থাকলেও জলজ উদ্ভিদ প্রায় নেই। পাশাপাশি বাইক্কাবিলের প্রচুর পর্যটক আসায় পাখিরা একটু দূরে থাকে। অনেক পর্যটকই পাখিদের বিরক্ত করে। পাখি শিকার হয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় কিছু মানুষ শিকারের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। বর্তমানে আমাদের পাঁচজন লোক বিলের পাহারায় থাকেন। কয়েক দিন আগেও শিকারির উৎপাত ছিল এখন সেটা নেই।

বিনয় কুমার রায়- শ্রীমঙ্গল সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘বিলের পাখি এখন আর কেউ শিকার করে না। এখানে বিলের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি কমিটি রয়েছে। তারাই পাহারার ব্যবস্থা করে। তবে বিলে তলদেশ ভরাট ও পানি কমে যাওয়াসহ পাখির খাবার কিছুটা সংকট রয়েছে।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্য ও বিশিষ্ট পাখি বিশেষজ্ঞ ড. পল থমসন বলেন, এ বছর বাইক্কা বিলে শীতকালীন জলচর পাখি গণনা করে তারা ৩৮প্রজাতির ৭হাজার ৮৭০টি পাখির দেখা পেয়েছেন। এ সংখ্যা বিগত দুই বছরের চেয়ে বেশি।
অথচ বার্ড ক্লাবের কাছে বাস্তবে বিগত ২০২৪সালে ছিল ৩৩প্রজাতির ৪৬১৫টি। ২০২৩সালে ৪০প্রজাতির ৬১৪১টি পরিযায়ী পাখি পাওয়া গিয়েছিল বাইক্কা বিলে সে তথ্য নেই বললেই প্রমানীত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকসহ সচেতন মহলের মন্তব্য বার্ড ক্লাবের তথ্য বিভ্রাট ও প্রকৃত কারন না জানা এবং পাখি শুমারী সটিকভাবে জানা প্রয়োজন।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..